আপনার কাশি হয়েছে? কোন সমস্যা নেই। ঔষধের দোকানে সারি সারি করে সাজানো আছে কাশির সিরাপ। তবে ক্রেতা হিসেবে যদি কিছু পরিচিত মুখ অর্থাৎ তরুণদের বার বার দেখেন, ভেবে অবাক হতেই পারেন যে এদের এত ঘনঘন কাশি হয় কেন? তার চেয়েও বড় কথা, দুই চামচ করে প্রতিদিন খেলে এত তাড়াতাড়ি তো বোতল শেষ হবার কথা না! তাহলে এরা এত কিনছে কেন এগুলো? কারো একটা লাগে, কারো আবার একাধিক।
মাদকসেবিরা ফেনসিডিলের দাম বেড়ে যাওয়ায় ফেনসিডিলের বিকল্প ডেক্সপোটেন সেবন করছে। ফেনসিডিলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় যুবক, কিশোর এমনকি স্কুলছাত্র থেকে শুরু করে বিশাল একটি অংশ নেশা হিসেবে ডেক্সপোটেন সেবন করছে। এজন্য বিভিন্ন মাদকসেবিদের আড্ডাখানা ও বিভিন্ন সড়কের আনাচে-কানাছে ডেক্সপোটেনের খালি বোতল পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। মাদকসেবিরা কম মূল্যে ও সহজলভ্য হওয়ায় ডেক্সপোটেনের প্রতি আসক্ত হচ্ছে।
মূলত ডেক্সপোটেন, সুডোকফ এবং তুশকার জনপ্রিয়তা বেশি। কারণ, এটা যতটা না ঔষধ, তার চেয়ে বেশি নেশাদ্রব্য। আগে ফার্মেসিতে ফেনসিডিল পাওয়া যেত। প্রজন্মের সর্বনাশ রচিত হওয়া শুরু করলে তা বন্ধ করা হয়। তাহলে ডেক্সপোটেন বা সমগোত্রীয় গুলো কেন নিষিদ্ধ করা হবে না? এর চেয়ে সহজ এবং সুলভ নেশা আর নেই। মাত্র ৭০-৮০ টাকায় ভরপুর নেশা!
জরিপ করে জানা যায়, অভিভাবকেরাও কেউই তেমন গুরুত্ব দেন না এসবে। এই বড়জোর, “কাশির ঔষধ খেয়ে ঘুমাচ্ছিস, না? বেয়াদব!” এই জাতীয় প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেন তারা। অথচ এই ঔষধ গুলো যে কী ভয়ানক প্রভাব ফেলে, তার সম্পর্কে যদি জানতেন? তাহলে হয়তো এর প্রভাব থেকে মুক্ত করার জন্য অভিভাবকরা সচেতন হতেন।
সিরাপগুলার ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে একজন ডায়াবেটিস ও মেডিসিনে ডাক্তার জানান, ‘এই ধরনের সিরাপগুলো ডাক্তারের একান্ত প্রেসক্রাইব ছাড়া বাজারে অবাধ বিক্রি নিষিদ্ধ। আর ইদানীং খোলা বাজারে এই ধরনের সিরাপগুলোর চাহিদা যুবকদের কাছেই বেশি। এই সিরাপগুলো মাত্রাতিরিক্ত সেবনের ফলে এক ধরনের নেশার সৃষ্টি করে যা পরবর্তীতে ব্রেইন, লিভার কিংবা হৃৎপিন্ডের ক্ষতি সাধন করে থাকে। তবে এর ক্ষতির প্রক্রিয়াটা খুব ধীর গতির।’